রঙিন ড্রাগন, ট্রেন, ফানুসের খেলা

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে শুক্রবার শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী ঘুড়ি উৎসব। বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশন এই ঘুড়ি উ‍ৎসবের আয়োজন করেছে।

সংগঠনটির উদ্যোগে বিগত ১০ বছর ধরে আয়োজন করা ঘুড়ি উ‍ৎসবটি পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতে পঞ্চম আয়োজন।

এবারের ঘুড়ি উৎসবের মূল স্লোগান “ প্রকৃতি- পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব সবার, ধর্ম যার যার উৎসব আনন্দ সবার। ”

দুই দিনব্যাপী ঘুড়ি উৎসবে এবার যেসব ঘুড়ি উড়ানো হবে তা হলো বিশাল পকেট কাইট, স্ট্যান্ড কাইট, ড্রাগন কাইট, সিরিজ কাইট, ট্রেন কাইট ও সবশেষে ফানুস উড়ানো। এছাড়া আরো থাকছে লায়ন ড্যান্স, রোমাঞ্চকর জর্বিং বলসহ সমুদ্র ঢেউয়ের চূড়ায় বাজিকরি ক্রীড়া।

উৎসবে মঙ্গল প্রদীপ ও আলোকিত ঘুড়ি উড্ডয়ন করা হবে। এছাড়া নানা ধরনের আকর্ষণীয় ইভেন্টও থাকছে ঘুড়ি উৎসবে। উৎসবে সাম্প্রদায়িক দানব দাহ করা হবে যাতে ধর্ম-বর্ণের কোনো ভেদাভেদ না থাকে। সবাই যার যার ধর্ম নিয়ে একসঙ্গে মিলে মিশে বসবাস করতে পারে।

সকালে প্রথম পর্বে ঘুড়ি উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেড়ারেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহজাহান মৃধা বেনু। এই সময় তিনি বাংলানিউজকে বলেন, “ছোটবেলা থেকে ঘুড়ি উড়াতে ভালো লাগে। আমি যখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি তখন থেকে ঘুড়ি ওড়াই। ”

তিনি আরো বলেন, “ওড়ানোর জন্য ঘুড়িই আমার সম্বল। যেখানে ঘুড়ি উৎসব হয় সেখানে ছুটে যাই, দেশে হউক আর দেশের বাইরে হউক। ”

“চীন, সাংহাই ও সিঙ্গাপুরে অনেক রঙ-বেরঙের ঘুড়ি কিনেছি এবং তা আকাশে উড়িয়ে অনেক আনন্দ পেয়েছি। ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। ”

ঘুড়ি উৎসবের দ্বিতীয় দিনে থাকছে হট এয়ার বেলুন উড্ডয়ন, ঘুড়ি কাটা প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী।
সমুদ্র সৈকতে আয়োজিত ঘুড়ি উসবের প্রথম দিন দেশ-বিদেশ থেকে অনেক শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন।

এ সম্পর্কে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সারা বাংলানিউজকে বলেন, “ঘুড়ি উৎসবে এসে অনেক ভালো লাগছে। আগে বাবা আসত, এবার আমি এসেছি। আগে মনে করতাম ঘুড়ি উড়ানো হয়তো অনেক কঠিন। কিন্তু এখন দেখি অনেক সহজ ও নতুন এক অভিজ্ঞতা। ”

ঘুড়ি উৎসবে দেশের বাইরে থেকেও অনেকে এসেছেন। ইংল্যান্ডের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ুয়া ছাত্র মহীউদ্দীন জিয়া ছুটে এসেছেন ঘুড়ি উৎসবে। ”

তিনি বলেন, “সিলেট ও কক্সবাজারের বিভিন্ন ঘুড়ি উৎসবে অংশ নিয়েছি। এ নিয়ে আটবার ঘুড়ি উৎসবে যোগ দিলাম। ঘুড়ি আমাদের ঐতিহ্য। সবার দায়িত্ব একে বিলীন হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করা, তা আধুনিক ঘুড়ি হউক অথবা সনাতন ঘুড়ি দিয়ে। ”

মফিজুল সাদিক, সমুদ্র সৈকত থেকে | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
জানুয়ারি ১১, ২০১৩, এমআইএস/সম্পাদনা: জনি সাহা, নিউজরুম এডিটর

No Comments Yet

Leave a Reply

Your email address will not be published.