মাছরাঙ্গা, ডলফিন, অক্টোপাসসহ নানা রঙ-বেরঙের ঘুড়িতে রঙিন হয়ে উঠেছে কক্সবাজার সৈকতের আকাশ। আর এই ব্যতিক্রমী দৃশ্য অবলোকন করে সৈকতে আসা দেশি-বিদেশি পর্যটক আর স্থানীয়রা। সেই সাথে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করতে আসা বিদেশি এনজিও কর্মীরাও মুগ্ধ হন সৈকতের এই বর্ণিল ঘুড়ির খেলা দেখে।
বিশ্বের এই দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কে ব্যতিক্রমী ভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যে শুক্রবার থেকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে শুরু হয়েছে দু’দিনব্যাপী ঘুড়ি উৎসব।
এ উৎসবের উদ্বোধন করেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ,বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা। উদ্বোধন শেষে আকাশে উড়ে বাংলা ঘুড়ির পাশাপাশি আধুনিক ঘুড়ি বেসাতি, ড্রাগন, ডেল্টা, মাছরাঙা, ঈগল, ডলফিন ও অক্টোপাসসহ অর্ধ-শতাধিক ঘুড়ি।
ঘুড়িতেবাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বেনুর সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত মিঃ ঝাং ঝু, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা।
অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, প্রত্যেক বছর যদি বিশ্বের দীর্ঘতম এ সমুদ্র সৈকতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয় তাহলে পর্যটন শিল্প বিকাশে ভূমিকা রাখবে এ উৎসব।
অংশগ্রহণকারী ইসরাত জাহান বলেন, ঢাকায় আমরা ছোট বেলায় প্রচুর ঘুড়ি উড়াতাম। এখন আর সেই খোলা আকাশ নেই। তাই বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের মতো জায়গায় ঘুড়ি উড়াতে পেরে খুব ভাল লাগছে। আমি মনে করি প্রতি বছর এ ধরণের আয়োজন করা দরকার।
অনন্য নাদিম বলেন, খোলা আকাশ পাশে সমুদ্র ঘুড়ি উড়াতে খুব ভালো লাগছে। অনেক বছর পর ঘুড়ি উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কাজ করেন উন্নয়নকর্মী নাসরিন আক্তার মনিকা, তিনিও আজ ছুটির দিন থাকায় সৈকতে ঘুড়ি উৎসব দেখতে আসেন। মনিকা বলেন, শত কাজের চাপের মাঝে আজ ছুটির দিনে সৈকতে এই বর্ণিল ঘুড়ি উৎসব দেখে অনেক ভালো লাগছে।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, দেশের পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। সেই সাথে নিত্য নতুন কর্মসূচি হাতে নিচ্ছে। তারই অংশ হিসেবে আজকের এই ঘুড়ি উৎসব। স্থানীয়দের পাশাপাশি এ ঘুড়ি উৎসবে মেতেছে পর্যটকরা। যা আগামীতেও আয়োজন করা হবে।
চীনের রাষ্ট্রদূত মিঃ ঝাং ঝু বলেন, এধরণের ঘুড়ি উৎসব চীনে এক সময় হতো। এখন তেমন একটা হয় না। তাই এই দীর্ঘ সমুদ্রের পাশে এসে ঘুড়ি উড়াতে পেরে খুবই ভাল লাগছে।
জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, ঘুড়ি উৎসব ঘিরে সমূদ্র সৈকতে কঠোর নিরাপত্তা নেয়া হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ঘুড়ি উৎসব শুরু হয়েছে। যা পর্যটকরা নিজেদের মত করে উপভোগ করছে।
বাংলাদেশ ঘুড়ি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মৃধা বেনু বলেন, আর্থিক সংকট থাকলেও সফলভাবে উদ্ধোধন হয়েছে ঘুড়ি উৎসবের। আগামীতে বাঙালীর ঐতিহ্যের এ ঘুড়ি উৎসব আয়োজনে সবাইকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।
কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি সংস্থায় কর্মরত আহমদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষও ভালো এখানকার সংস্কৃতি ও ভালো। এই উৎসবটা দেখে খুব ভালো লাগছে।
সন্ধ্যার পর চলে ফানুস উড়ানো উৎসব। দিনে ছিল নানা রঙের ঘুড়ি আর সন্ধ্যার পর নানা রঙের ফানুসে বর্ণিল হয়ে উঠে সৈকতের অন্ধকার আকাশ।
সরওয়ার আজম মানিক ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, www.channelionline.com